Inducting Class V in Primary Education:দিনের পর দিন হাইকোর্টে শিক্ষা সম্পর্কিত মামলা বেড়েই চলেছে হাইকোর্টে। বেশীরভাগ মামলার নিষ্পত্তি তো হচ্ছে না, বরং বিভিন্ন কারণে তারিখের পর তারিখ ঝুলেই যাচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত (Inducting Class V in Primary Education) করার জন্য তেমনি একটা মামলা জমা পড়েছিল হাইকোর্টে। বিস্তারিত জানুন সেই মামলা সম্পর্কে ।
Inducting Class V in Primary Education
আমরা সকলেই জানি ২০১৯ সালে স্কুল শিক্ষা দপ্তর জানায় ধাপে ধাপে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত করা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন কারনে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়ে ওঠেনি। কারন কোনো স্কুলে পর্যাপ্ত ক্লাসরুমের অভাব আবার কোনো স্কুলে নেই উপযুক্ত জায়গা। এছাড়াও উপযুক্ত শিক্ষকের অভাবে শিক্ষক ছাত্র অনুপাতও এখন যথাযথ হয়ে ওঠেনি বেশীরভাগ স্কুলে। এই অনুপাত যথাযথ হলে একটি স্বাস্থ্যকর শিক্ষার পরিবেশ অনেকটা সহজতর হয়ে ওঠে যা শ্রেণিকক্ষের স্বতন্ত্রতা প্রদান করে। তবে ইতিমধ্যেই শিক্ষা দপ্তর বিষয়টি নিয়ে ভাবা শুরু করেছে। অনেক জেলায় যে সমস্থ বিদ্যালয়ে ছাত্রের তুলনায় শিক্ষক বেশি সেখান থেকে শিক্ষক মহাশয় কে অন্য বিদ্যালয়ে অর্থাৎ যে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর তুলনায় শিক্ষক কম সেখানে ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়েছে। তাই সেই সমস্থ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্র অনুপাত যথাযথ হয়েছে।
টেট পাস ডি এল এড চাকরি প্রার্থীদের একাংশ জানাচ্ছেন যে তারা প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলিতে পঞ্চম শ্রেণি যোগ করার জন্য হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। এখন প্রশ্ন হল যে তারা চাকরি প্রার্থী অর্থাৎ বিদ্যালয়ের সাথে তারা যুক্ত নন। তাহলে তাদের কেন দাবি যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে পঞ্চম শ্রেণী যুক্ত করা হবে।
তাদের যুক্তি হলো বিদ্যালয় গুলিতে যদি পঞ্চম শ্রেণীর যুক্ত করা হয় তাহলে শূন্য পদের সংখ্যা অনেক বাড়বে, এবং নিয়োগ হবে খুব তাড়াতাড়ি। এছাড়া যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে নিয়োগের জন্য যে পরীক্ষা হয় সেই পরীক্ষার নোটিফিকেশনে বলা থাকে যে ক্লাস ১ থেকে ৫ পর্যন্ত নিয়োগের জন্য আবেদন করা যাবে অর্থাৎ ক্লাস ৫ হল প্রাথমিক বিদ্যালয় এর অংশ।
শিক্ষা দপ্তর ঘোষণা করেছিল, প্রতিটি ব্লক ও মিউনিসিপ্যালিটি থেকে কমপক্ষে ১০ টি প্রাথমিক স্কুলের ভবন মেরামতি এবং পঞ্চম শ্রেণীর যোগ করার কথা। চাকরিপ্রার্থীদের প্রশ্ন হল কেন এই পর্যায়ে দশটি করে প্রাথমিক স্কুলকে পঞ্চম শ্রেণির জন্য বাছাই করতে বলা হবে ! কারণ প্রতিটা ব্লকে ১০০ র উপরে প্রাথমিক স্কুল আছে। আর তাছাড়া প্রত্যেকটি গ্রামে যেমন প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকে প্রত্যেকটি গ্রামে হাই স্কুল থাকেনা। ফলস্বরূপ যদি প্রত্যেকটা বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত হয় তাহলে ওই ছোট ছোট বাচ্চাদের অনেকটা দূরে পঞ্চম শ্রেণী ভর্তি হওয়ার জন্য হাই স্কুলে যেতে হবে না।
২০২২ সালের প্রাথমিক টেট পাশ ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থী বিদেশ গাজী, মোহিত করাতি, হাফিজুর রহমান, সুভাষচন্দ্র বাগেরা কলকাতা হাইকোর্টের গত ১৮ই সেপ্টেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। তাদের দাবি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী যুক্ত করে ছাত্র শিক্ষক সঠিক অনুপাতে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে । বিদেশ গাজী বলেন ” প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণ করে মামলাটিকে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে বিবেচনা করতে প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান , পরবর্তীকালে জয়মাল্য বাগচি এবং গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি শুনানি হয় ।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে হলফনামা জমা দিয়ে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর জানাল রাজ্যের ৩২ হাজার প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিকে যুক্ত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ শুরু করে দিয়েছে সরকার। ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে পাঁচ দফায় প্রাথমিক স্কুলগুলির পরিকাঠামো বাড়িয়ে, প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। কোন দফায় কতগুলি বিদ্যালয়ের সাথে পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত (Inducting Class V in Primary Education) করা হবে তা নিচে দেওয়া হল ।
- প্রথম দফায়:- ২৩৩৫ হাজার
- দ্বিতীয় দফায়:-১৭৭৫ হাজার
- তৃতীয় দফায়:-২৯৬৬ হাজার
- চতুর্থ দফায় :- ১২ হাজার
- পঞ্চম দফায় ১৩ হাজার ৯৩টি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিকের আওতায় আনা হবে
তাই আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়ি স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে নোটিশ দেওয়া হবে, যাতে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলিতে পঞ্চম শ্রেনি যুক্ত করা হয় (Inducting Class V in Primary Education)।
এই নিউজটি যদি সমস্থ শিক্ষক মহলে অনুগ্রহ করে ছড়িয়ে দিন তাহলে আপনার পরিচিত সকল শিক্ষক মহাশয়গন এখন থেকেই অবগত হয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারবেন। আর আপনার যদি কিছু বলার থাকে বা কিছু জানার থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে জানাবেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করবো আপনার প্রশ্নের বা মতামতের উত্তর দেওয়ার।
আপনার প্রতিবেদনটি খুবই সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অনেকেরই এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীর অন্তর্ভুক্তি করণ বাধ্যতামূলক এর সঠিক কারন কি এবং ঘটনার প্রেক্ষাপট কি সে সম্পর্কে ধারণা ছিল না। আমরা প্রায় সবাই জানতাম এটা সরকারের/ বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ।
আমি আরামবাগ সার্কেলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আমার স্কুল( স্থাপিত ১৯৬১) চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত। এস আই অফিস থেকে গত সপ্তাহে আমাকে ফোন করে ক্লাসরুম কটা,নূতন ক্লাসরুম তৈরি করার পর্যাপ্ত জায়গা আছে কি না, শৌচাগারের বিবরণাদী জানতে চাওয়া হয়েছিল।
আপনার মূল্যবান প্রতিবেদনে আমার ধারণা স্পষ্ট হয়েছে। সুতরাং আপনি সঠিক,সত্য, বাস্তব, নির্ভূল, নিরপেক্ষ। আমি একজন প্রতিবন্ধী/ বিশেষ ভাবে সক্ষম প্রধান শিক্ষক।
২০১১ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আজও পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জন্য কিছু বরাদ্দ করেনি। বাম আমলে নিযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা তবুও একটা- দুটো ইনক্রিমেন্ট পেয়েছিলেন। কিন্তু মা- মাটি -মানুষ সরকারের আমলে নিযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বিশেষ করে প্রতিবন্ধী প্রধান শিক্ষকদের জন্য একটুখানি ভাবতে মানবিক অনুরোধ করছি আপনার মাধ্যমে।
প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে একটা বিদ্যালয়ের সকল দিক ঠিকমতো পরিচালনা করা একজন শিক্ষকের খুবই সমস্যা আবার তিনি যদি একজন দৈহিক প্রতিবন্ধী শিক্ষক হন।
এই উপরিউক্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে আপনার মাধ্যমে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি।
নিবেদক-
বিনীত –
অভিজিৎ কোঁঙার, প্রধান শিক্ষক শুশনিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় A-23),আরামবাগ চক্র।
মোবাইল – 8515035162.
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মনোভাব প্রকাশ করার জন্য। আপনার মানসিক অবস্থা আমরা বুঝতে পারছি। আপনি আপনার প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন এর জন্য আপনাকে সাধুবাদ জানাই। অনেক বছর প্রাইমারি স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ ছিল। টিচার ইন চার্জ দ্বারা বেশীরভাগ স্কুল পরিচালিত ছিল । বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে জেলাভিত্তিক স্কুল গুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করেছে। আশা করি প্রধান শিক্ষকের ইনক্রিমেন্ট নিয়ে পরবর্তী সময়ে বর্তমান সরকার কিছু পদক্ষেপ নেবে। সরকারি কর্মচারী হিসাবে সরকারের উপর ভরসা অবশ্যই রাখতে হবে। আশা করি আপনার সমস্যার সমাধান হবে।