পদ প্রকরণ
বাংলা ব্যাকরণ
(Parts of Speech in Bengali)
পদ প্রকরণ |
Parts of Speech in Bengali: আজ আমরা বাংলা ব্যাকরণের একটি অধ্যায় পদ প্রকরণ (Parts of Speech in Bengali) সম্পর্কে আলোচনা করবো। এই অধ্যায়টি আগামী প্রাইমারি টেট (WB Primary TET) বা আপার প্রাইমারি টেট (WB Upper Primary TET )পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
English Grammar এ যেমন আমরা Parts of Speech পড়েছি বাংলা ব্যাকরণে সেটাই পদ প্রকরণ।
পদ প্রকরণ – বাংলা ব্যাকরণ (Parts of Speech in Bengali)
পদ কাকে বলে?
পদ : বাক্যে ব্যবহৃত অবস্থান পরিচায়ক চিহ্নযুক্ত বা বিভক্তিযুক্ত শব্দের নাম পদ।
কেবল শব্দ ও ধাতু ভাষায় ব্যবহৃত হয় না। ভাষায় ব্যবহৃত হওয়ার জন্যে শব্দ ও ধাতুর সঙ্গে বিভক্তির যোগ অপরিহার্য হয়ে পড়ে।
পদ – বিভাগ :
বাংলা ভাষায় তৎসম, তদ্ভব ও দেশি-বিদেশি প্রভৃতির যত প্রকারের শব্দ আছে সেগুলোকে মোট দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
- 1. নাম – পদ
- 2. ক্রিয়া পদ
1. নাম পদ: প্রাতিপাদিকের সঙ্গে নাম বিভক্তি যুক্ত হয়ে নাম পদ গঠিত হয়। এই নাম বিভক্তির নাম কারক বিভক্তি।
2. ক্রিয়া পদ: ধাতুর সঙ্গে ক্রিয়া বিভক্তি যুক্ত হয়ে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়।
নাম পদ গুলিকে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা যায়।
- i) বিশেষ্য
- ii) বিশেষণ
- iii) সর্বনাম
- iv) অব্যয়
বাংলা পদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পদের প্রকারভেদ পাঁচ রকম হয়ে থাকে।
যেমন :
- i) বিশেষ্য,
- ii) সর্বনাম,
- iii) বিশেষণ,
- iv) অব্যয় এবং
- v) ক্রিয়া
বিশেষ্য পদ : বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত কোন ব্যক্তি, বস্তু, গুন,স্থান,কাল, ভাব ও ক্রিয়া প্রবৃত্তির নাম কি বিশেষ্য পদ বা নাম পদ বলে।
• বিশেষ্য পদ পাঁচ প্রকার হয়ে থাকে।
- ক) সংজ্ঞা বাচক বিশেষ্য বা নামবাচক বিশেষ্য : পশ্চিমবঙ্গ, গোলাপ, গঙ্গা, হিমালয় ইত্যাদি
- খ) বস্তু বাচক বিশেষ্য: বাতাস, লবণ, জল, চিনি ইত্যাদি
- গ) জাতিবাচক বিশেষ্য: পর্বত , নদী, মানুষ, হিন্দু, মুসলিম, ব্রাহ্মণ ইত্যাদি।
- ঘ) গুণবাচক বিশেষ্য: দয়া, ভালো, মাধুর্য, দারিদ্র ইত্যাদি ।
- ঙ) ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য: দৌড়ানো, বসা, ধ্যান, দর্শন শ্রবণ ইত্যাদি ।
• প্রভাত, সন্ধ্যা, মধ্যাহ্ন প্রভৃতি হলো সময় বাচক এবং গণ, বৃন্দ শ্রেণী প্রভৃতি সমষ্টিবাচক বিশেষ্য। এরা জাতি বাচকেরই অন্তর্গত কিন্তু অনেকে আবার পৃথকভাবে নির্দেশ করে থাকেন।
সর্বনাম পদ: বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত বিশেষ্য পদের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম পদ বলে।
• সর্বনাম পদ আবার বিভিন্ন রকম হতে পারে।
নিম্নে সর্বনাম পদের প্রকারভেদ দেওয়া হলো :
- ক) ব্যক্তিবাচক সর্বনাম: সে, কে, যিনি, আপনি, তুমি, আমি প্রভৃতি। যেমন : সে কলকাতা যাবে।
- খ) প্রশ্ন বাচক সর্বনাম: কে, কি, কোন, কেন প্রভৃতি।
- যেমন: তুমি কোন বইটি পড়বে আজ ?
- গ) নির্দেশক সর্বনাম: এটা, ওটা, সেটা ,তা, এই, ওই প্রভৃতি ।
- যেমন : এটা তুমি ভালো করে বোঝো ।
- ঘ) সম্বন্ধবাচক সর্বনাম: যে, যিনি, যা,তা, তারা, যারা প্রভৃতি।
- যেমন: যারা কঠোর পরিশ্রম করে তারা একদিন সাফল্য পাবেই।
- ঙ) পরিমাণ বাচক সর্বনাম: যত, তত, কত, এত প্রভৃতি।
- যেমন : যত বেশি খাবে তত বেশি মোটা হবে।
- চ) আত্ম বাচক সর্বনাম : স্ব, নিজে, আপনি প্রভৃতি।
- যেমন: আপনারা স্বগৃহে আসবেন।
- ছ) বিশেষণ রূপে ব্যবহৃত সর্বনাম : যে, যেই, সে, সেই , কই প্রভৃতি।
- যেমন: যে জন যায়, সে আর কখনো ফেরে না ।
- ঝ) দ্বিরুক্ত সর্বনাম: পরস্পর (পর+পর), অপারাপর (অপর + অপর)
- যেমন: তারা পরস্পর একে অন্যের সঙ্গে মিলেমিশে থাকে।
বিশেষণ পদ
যে পদ বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত বিশেষ্যের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ প্রকৃতি বোঝায় সেই পথকে বিশেষণ পদ বলে।
যেমন :
বিমল বাবু খুব ভালো মানুষ। – ব্যক্তির গুণ।
• বিশেষ বিপদের প্রকারভেদ নিম্নরূপ:
- ক) বিশেষণের বিশেষণ: বিশেষণের বিশেষণ বিশেষণের গুণ বা অবস্থা প্রকাশ করে।
- ছেলেটি খুব শান্ত । মেয়েটি অতি চালাক।
- খ) বিধেয় বিশেষণ: বিধেয় বিশেষণ বিশেষ্যর পরে বসে।
- যেমন : রহিমের মন খারাপ ।
- গ) ক্রিয়া বিশেষণ: যে পদ ক্রিয়ার গুন বা অবস্থা প্রকাশ করে তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে।
- যেমন: আস্তে চল ভাই। ধীরে ধীরে ছোটো।
অব্যয় পদ: যে পদের ক্ষয় নেই কোন পরিবর্তন নেই তাকে অব্যয় পদ বলে।
অব্যয় পদের প্রকারভেদ :
- ক) সংযোজক অব্যয়: যে অব্যয় এক পদের বাক্যকে সঙ্গে অন্য পদের বাক্যের সাথে সংযোজন করে তাকে সংযোজক অব্যয় বলে।
- যেমন : পুলিশ ঘরে এলো এবং চোর ঘর থেকে পালিয়ে গেল।
- খ) বিয়োজক অব্যয়: যে সকল অব্যয় বিভিন্ন পদ বা বাক্য কে বিচ্ছিন্ন করে তাদের বিয়োজক অব্যয় বলা হয়।
- যেমন : রাম অথবা শ্যাম আমার সাথে চলো।
- গ) সংকোচক অব্যয়: কিছু অব্যয় বাক্যের অর্থ সংকোচ বিধান করে তাদের বলা হয় সংকোচক অব্যয়।
- যেমন: তথাপি
- ঘ) অনুকার অব্যয়: যেসব অব্যয় অব্যক্ত শব্দের অনুকরণ করে তাকে বলা হয় অনুকার অব্যয়।
- যেমন: টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ে।
- ঙ) প্রশ্নসূচক অব্যয়: যেসব অব্যয় প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে ব্যবহৃত হয় তাদের বলা হয় প্রশ্নসূচক অব্যয়।
- যেমন : তাইনাকি?, কি হে!
- – চাকরি টা আমি পেয়ে গেছি, শুনে বেলা বোস অবাক হয়ে বললো, তাই নাকি?
- চ) সম্মোধন সূচক অব্যয়: যে সকল অব্যয় কাউকে আহবান করতে ব্যবহৃত হয় তাকে সম্বোধন সূচক আব্বায় বলে।
- যেমন: ওহে, হে,
- – ওহে মাঝি, যাবে নাকি ওপরে ?
- ছ) আবেগ সূচক অব্যয়: যে সকল অব্যয় বিস্ময়, হর্ষ, দুঃখ, ঘৃণা প্রকাশ করে তাদের আবেগ সূচক অব্যয় বলা হয়।
- যেমন: আহা!, হায়!, হুররে..!
- – আহা , কি আনন্দ আকাশে, বাতাসে !
ক্রিয়া পদ : যে পদের দ্বারা খাওয়া, করা প্রকৃতি যে কোনো কাজকে বোঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে।
• ক্রিয়া পদকে দুই প্রকার: সমাপিকা ক্রিয়া এবং অসমাপিকা ক্রিয়া।
ক) সমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার দ্বারা বাক্য সম্পূর্ণ হয় তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলা হয়।যেমন : সে কলকাতা পৌঁছে গেল। এখানে গেল সমাপিকা ক্রিয়া।খ) অসমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্য শেষ হয় না , বক্তার আরো বলার আকাঙ্খা থাকে তাকে বলা হয়।যেমন: আমি কলেজে গিয়ে দেখা করবো। এখানে গিয়ে অসমাপিকা ক্রিয়া।
• আবার কর্মভেদে ক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
– সকর্মক ক্রিয়া এবং অকর্মক ক্রিয়া।
ক) সকর্মক ক্রিয়া: বাক্যের মধ্যে যে ক্রিয়া কর্ম সম্পাদন করে তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে।যেমন: সে ভাত খেয়েছে । – এখানে খেয়েছে ক্রিয়া টি সকর্মক। কর্মটি হলো ভাত।খ) অকর্মক ক্রিয়া: বাক্যের মধ্যে যে ক্রিয়া কর্ম সম্পাদন করে না তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে।যেমন: কুম্ভকর্ণ ঘুমাচ্ছে।এই বাক্যের মধ্যে কোনো কর্ম নেই, তাই এটি অকর্মক ক্রিয়া।
Page Contains: Parts of Speech in Bengali, Bengali Grammar, পদ প্রকরণ, বিশেষ্য , বিশেষণ , সর্বনামের বিভাগ , বিশেষণের বিশেষণ, ক্রিয়ার বিভাগ , বাংলা ব্যাকরণ , বাংলা টেট , WB Primary TET Grammar, WB Upper Primary TET Grammar
Visited 71 times, 1 visit(s) today
1 thought on “Parts of Speech in Bengali”